মধ্য প্রাচ্যের অঞ্চলের এবং ইন্দো
-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের সাম্প্রতিক ঘটনায় বিশ্লেষকরা খুবই চিন্তিত।
সিরিয়া ,কুর্দিস্তান ,উত্তর কোরিয়া এবং সন্ত্রাসবাদের মত বিষয়গুলির উপর
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ব।
ভারতও
অদূরদর্শী ঘটনাগুলির মুখোমুখি হওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তূত করার ক্ষেত্রে
খুব বেশি পিছনে নেই। তাই ইতিহাস ,পরিস্থিতি এবং ভারতের সাথে সাম্প্রতিক
কিছু ঘটনার কারণে ভারত বিশ্বের লোড ব্যালেন্সাররের ভূমিকাকে আরও বেশি
গুরুত্ব দিচ্ছে।
কিছু সময় আগে ,ভারত ইরানের চাবহার বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তানের জনগণের কাছে উপহার হিসেবে গমের একটি চালান পাঠিয়েছিল। এই উন্নয়ন আফগানিস্তানের
"বিশেষ সন্ত্রাসী স্থান " পাকিস্তানের নির্ভরতা কম করে দিয়েছে শুধু তাই নয়
তার সঙ্গে এই উন্নয়ন ভারতকে কেন্দ্রীয় এশিয়ার মধ্যে প্রবেশের সুযোগ করে
দিয়েছে এবংমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের দ্বন্দ্বের মধ্যে ভারত শান্তি
প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব প্রয়োজন অনুসারে পালন করবার সুযোগ পেয়েছে।
তাছাড়া
,ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুবই আগ্রহী ভারতের
সাহায্যে ইন্ডো -প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং
পাকিস্তানের উপরেও নজর রাখতেও আগ্রহী। তাছাড়াও মাকিন যুক্তরাষ্টের ভারতের
সাহায্যের প্রয়োজন আফগানিস্থানের পুনঃনিরর্মাণের জন্য। সাম্প্রতিক ভারত ও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিতে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের এই চাহিদাগুলিকে
প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ভারত ও রাশিয়ার কয়েক দশকের প্রীতির সম্পর্ক খুবই
জনপ্রিয় ও প্রচোলিত। ভারতের রাশিয়া ও মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সঙ্গে
সামীপ্য বিবেচনা করে এই ধারণা করা যেতে পারে যে ভারত সম্ভবত বিশ্বের শান্তি
বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
একই
সময়ে ভারতের ও ইসরায়েলের দ্রুত ঘনিষ্ঠতা ও উন্নয়নশীলতা সঙ্গে সঙ্গে
ভারত সিরিয়ার বাশার আল আসাদ , প্যালেস্টাইন , জর্ডান ,মিশর ,সৌদি আরব ,
সংযুক্ত আরব আমিরাত , তুস্কর ইত্যাদি প্রদেশের সাথে আন্তরিক সম্পর্কের
ও ভারসাম্য বজায় রাখার প্রচেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে যার ফলে ভারত ও
ইসরায়েলের এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্রতার সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে।ভারতের
সমান্তরাল বন্ধন সবচেয়ে মূল্যবান এবং প্রকৃতপক্ষে এটি ইসরায়েলের জন্য খুবই
প্রয়োজনীয় , কারণ ইসরায়েল ক্রমাগত ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বিরোধিতার
সম্মুখীন হচ্ছে , মধ্যপ্রাচ্যের ফাতাহ -হামাস এর সঙ্গে জোটবন্ধন ও
কূটনৈতিক প্রসারের জন্য।
পশ্চিম
এশিয়ার পর , এবার আমরা পূর্ব দিকে একটু নজর রাখি। আগে যেমন উল্লেখ করা
হয়েছে , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারসাম্য বজায়
রাখার জন্য ভারতের সাহায্য নিতে আগ্রহী।তাছাড়া ,জাপান,ভিয়েতনাম ,সিঙ্গাপুর
, অস্ট্রেলিয়া ,মঙ্গোলিয়া , ব্রূনাই , দক্ষিণ কোরিয়া এবং সমস্ত আসিয়ান
(ASEAN) সদস্যের সাথে ভারতের চমৎকার কৈশলগত ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এই অঞ্চলে
এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। এই তথ্যের একটি বিশ্বাসযোগ্য প্রমান
যে সমস্ত ১০ টি এশিয়ান দেশের রাষ্ট্রপতিরা সহজেই এই বছর প্রধান অথিতি
হিসাবে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও
অস্ট্রেলিয়া ভারত -মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -জাপান নৌবাহিনী মৈত্রীসংগঠনে
অংশগ্রহণ করতে খুবই আগ্রহী ছিল এবং এই প্রকল্পনা সফল করতে অস্ট্রেলিয়া
মার্কিন কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করেছে। ভারতের ভুটান ,বাংলাদেশ ,
মিয়ানমার , শ্রীলংকা এবং নেপালের সাথে উন্নত সম্পর্ক উপ মহাদেশে ভারতের
জন্য সুবিধাজনক প্রমাণিত হয়েছে।
ভারত সার্ক থেকে একটি নতুন গ্রূপ তৈরী
ক রতে সফল হয়েছে - "বঙ্গোপসাগর ইনিশিয়াটিভ ফর মাল্টি -সেক্রেটারি
টেকনিক্যাল ইকোনমিক কো -অপারেশন (বিমসটেক ) যার মধ্যে বাংলাদেশ ,মায়ানমার ,
শ্রীলংকা , থাইল্যান্ড , ভুটান ও নেপাল রয়েছে। পাকিস্তান এই গ্রূপের মধ্যে
নেই। ভারত যেহেতু কোন দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ চীনের সাথে ডোকলাম
(doklam)অচলাবস্থা চলাকালীন করেনি , তাই তা ভারতকে নিজের জায়গা দৃঢ় করতে
সাহায্য করেছে। এটা সত্যি যে চীনকে
ডোকলাম
থেকে পরাজয় স্বীকার করে প্রত্যাবর্তন করতে হয়েছিল এবং পরাজয়ের পরে চীনের
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping) ভারতকে আহবান জানান ভারতের সঙ্গে উন্নত
সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যে। ডাটা দেখাচ্ছে যে ভারত উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয়
বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার (চীনের পরে )। বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে
গেলে দেখা যায় যে ভারতের ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ফ্রান্স , জার্মানি এবং
যুক্তরাজ্য সহ সমস্ত সদস্য দেশগুলির সাথে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।
এটা
পরিষ্কার বলা যায় যে , তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধর কালো ঘন মেঘ প্রতিদিন আরও
অন্ধকার ও ভয়াভহ হয়ে উঠছে ,কিন্তু ভারত তার কূটনৈতিক সম্পর্ক, বিশাল
অর্থনীতি , শক্তিশালী সশস্ত্র সেনা বাহিনী এবং শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ
আধ্যাত্মিক সস্কৃতির সাহায্যে ভবিষৎতে " বিশ্বের লোড ব্যালেন্সার " হয়ে
উঠবে।
x